পাকিস্তানি পতাকাবাহী জাহাজসমূহ ভারতীয় বন্দর ব্যবহার নিষেধাজ্ঞার পর এবার পালটা পদক্ষেপ নিল পাকিস্তান। দেশটি জানিয়েছে, ভারতীয় জাহাজসমূহ পাকিস্তানি বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না।শনিবার রাতে পাকিস্তান পাল্টা এই পদক্ষের কথা ঘোষণা দিয়েছে। সাম্প্রতিক কাশ্মীর হামলার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এটি একটি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তান সরকারের সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বন্দর ও জাহাজ চলাচল বিভাগের এক বিবৃতিতে বলেছে, “পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে সমুদ্র বিষয়ক সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পাকিস্তান তার সমুদ্রের স্বাধীনতা বজায় রাখার জন্য, অর্থনৈতিক এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে ভারতের পতাকাধারী কোনো জাহাজকে পাকিস্তানের বন্দরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পাকিস্তানের পতাকাধারী কোনো জাহাজ ভারতের বন্দরে ঢুকবে না। এর ব্যতিক্রম হলে তা আলাদা করে যাচাই করা হবে এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”এর আগে শনিবার ভারত সরকার জানিয়েছিল, সরাসরি হোক বা ঘুরপথে, পাকিস্তানি পণ্য কোনোভাবেই এ দেশে প্রবেশ করতে পারবে না। পেহেলগাম কাণ্ডের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পাকিস্তান থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আমদানি নিষিদ্ধ করেছে নয়াদিল্লি। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিবৃতি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। এতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশনা জারি না-হওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এর কোনো ব্যতিক্রমের জন্য অবশ্যই ভারত সরকারের আগাম অনুমতি নিতে হবে। কাশ্মীরে হামলার ঘটনার পরেই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল পাকিস্তান। তারা জানিয়েছিল, ভারত থেকে কোনো পণ্য আমদানি করা হবে না বা ভারতে কোনো পণ্য রপ্তানি করা হবে না।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একমাত্র বাণিজ্যপথ ওয়াঘা-আটারি ক্রসিং পহেলগাঁও হামলার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরও পাকিস্তান থেকে পরোক্ষ আমদানি চালু ছিল।
ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পহেলগামে গত ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পটভূমিতে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। এই ঘটনার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে ভারত।
এ ঘটনায় প্রতিবেশি দেশ দুটি ইতিমধ্যে একে-অপরের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পাল্টা-পাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে, উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী শনিবার তার আবদালি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা, এই পদক্ষেপকে ‘প্রকাশ্য উস্কানি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।